২১ নভেম্বর ২০২৫ , ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫

সাত বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি জামায়াত সহ আট দলের

অনলাইন প্রতিবেদক
আপলোড সময় : ২০-১১-২০২৫
সাত বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি জামায়াত সহ আট দলের
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ ৫ দফা দাবি এবং গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বিজয় নিশ্চিতে প্রচারণার অংশ হিসেবে ৭টি বিভাগীয় শহরে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতসহ আন্দোলনরত ৮ দল।

বুধবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৫ দফা দাবিতে ৮ দলের নেতাদের বৈঠক-পরবর্তী যৌথ প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ।


তিনি জানান, আগামী ৩০ নভেম্বর রংপুর, ১ ডিসেম্বর রাজশাহী, ২ ডিসেম্বর খুলনা, ৩ ডিসেম্বর বরিশাল, ৪ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ, ৫ ডিসেম্বর সিলেট এবং ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে।


ব্রিফিংয়ে মাওলানা ইউসুফ আশরাফ বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তিসহ পাঁচ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে রয়েছে ৮ দল। ইতোমধ্যে সরকার আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিয়েছে। তবে চূড়ান্ত আইনি ভিত্তি গণভোট নির্বাচনের আগে করার দাবি ছিল আমাদের। কিন্তু সরকার জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আরেকটি দাবি ছিল ফ্যাসিবাদীদের বিচার। ইতোমধ্যে ফ্যাসিস্টদের প্রধান অভিযুক্তদের মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষিত হয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে কেউ আর ফ্যাসিবাদী হওয়ার দুঃসাহস করবে না বলে আমরা মনে করি। যারা ক্ষমতায় বসবে তারা আর গুম-খুনের রাজনীতি করার সাহস পাবে না। উন্মুক্ত আদালতের মাধ্যমে প্রদত্ত এই রায়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হয়েছে।’

মাওলানা ইউসুফ আশরাফ বলেন, “আমাদের দাবি ছিল পিআর ব্যবস্থা বাস্তবায়ন। ৮ দলের কেউ কেউ চেয়েছিল উভয় কক্ষে পিআর, কেউ কেউ শুধু উচ্চকক্ষে। উচ্চকক্ষে পিআর ব্যবস্থা জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, আদেশের মাধ্যমে সাময়িকভাবে বাস্তবায়িতও হয়েছে। গণভোটে ‘হ্যাঁ’ জয়ী হলে এটি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়িত হবে।”

তিনি বলেন, ‘আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি ছিল ন্যূনতম লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। দেশের বিভিন্ন স্থানে খুন-খারাপি অব্যাহত রয়েছে। কিছু দিন আগে পল্লবীতে বিএনপি কর্মী খুন হয়েছেন। আমরা এসব ঘটনার নিন্দা জানাই। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা জরুরি। এজন্য চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ইউএনও ও ওসি পর্যায়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পঞ্চম দাবি ছিল—জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের নিষিদ্ধ করা। এ দাবির কোনও অগ্রগতি এখনও দেখা যাচ্ছে না।’

কর্মসূচি ঘোষণা করে খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির বলেন, “গত ১৬ নভেম্বর ৮ দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডসহ ৫ দফা দাবি এবং গণভোটে ‘হ্যাঁ’ বিজয় নিশ্চিত করতে প্রচারণা জোরদার করা হবে। কারণ ‘হ্যাঁ’ জয়ী না হলে জুলাই সনদ বাস্তবায়িত হবে না। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা আন্দোলনে আছি এবং থাকবো।

‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে ক্যাম্পেইন পাঁচ দফার সঙ্গে নতুন সংযোজন কিনা—এমন প্রশ্নে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘হ্যাঁ-না ভোট জুলাই সনদের জন্য। আমাদের এক নম্বর দাবি জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি আদেশের মাধ্যমে হয়েছে। এরপর গণভোট, তারপর নির্বাচন ও সংসদ। গণভোটের রায় না হলে প্রথম দাবি পূর্ণ হয় না। তাই এটি নতুন সংযোজন নয়; পাঁচ দফার মধ্যেই ‘হ্যাঁ’-এর পক্ষে ক্যাম্পেইনের বিষয়টি রয়েছে।”

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদের পরিচালনায় প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, নায়েবে আমির মাওলানা সাখাওয়াত হুসাইন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলে বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা শরাফত হুসাইন, জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, নেজামে ইসলামী পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদেক হক্কানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা তাওহিদুজ্জামান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির দফতর সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল আলম, অর্থ সম্পাদক রিয়াজ হোসেন প্রমুখ। 


কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ